নাসিরনগরে কালবৈশাখীর তাণ্ডব, ৪০ ঘরবাড়ি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ লণ্ডভণ্ড

মোঃ খোকন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে কালবৈশাখী ঝড়ে অন্তত ৪০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্তসহ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে।

রবিবার রাত থেকে থেমে থেমে রাতভর উপজেলার সদর ইউনিয়ন, নাসিরপুর, দাতমন্ডল, ধনকুড়া, কুলিকুন্ডা ও মন্নরপুর এলাকার উপর দিয়ে এ ঝড় আঘাত হানে।

ঝড়ের কবলে পড়ে ভেঙে গেছে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ১০টির মত খুঁটি ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কিছু ট্রান্সমিটার। চার শতাধিক সংযোগ লাইন ও দুই শতাধিক মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক গাছ ভেঙে সঞ্চালন লাইনের ওপর পড়ায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ১৩০টি গ্রামের প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝড়ে বাড়িঘরের টিনের চালা উড়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে আছড়ে পড়েছে। এছাড়া বেশকিছু দোকানপাট ও হাঁস, মুরগির খামারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের তারের ওপর ঝুলে আছে। কিছু কিছু এলাকায় কয়েকটি শতবর্ষী কৃষ্ণচূড়া গাছের গোড়া উপড়ে গেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাসিরনগরে কালবৈশাখী ঝড়ে সদরে ৯টি, কুলিকুন্ডা ৩টি, দাতমন্ডল ১০টি, নাসিরপুর ৫টি, ধনকুড়া ৪টি, মন্নরপুর গ্রামে ৮-১০টি ও বুড়িশ্বর গ্রামে ৩টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে বড়ঘাট এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ৩৩ কেবি লাইনের ৫টি খুঁটি ভেঙে বিদ্যুতের তারসহ মাটিতে পড়ে রয়েছে। অনেক গাছ বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে পুরো উপজেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সকাল থেকে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন সড়ক থেকে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার অপসারণের কাজ শুরু করেছে।

দাতমন্ডল গ্রামের আরজু মিয়া বলেন, আমার চাচার রান্নাঘর ও গরুর দুটি টিনের ঘর উড়ে দূরে ধান ক্ষেতে গিয়ে পড়েছে।

নাসিরনগর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জোনাল ম্যানেজার প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, ঝড়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক জায়গায় বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশকিছু খুঁটি ও মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা জেলা অফিসে যোগাযোগের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খুঁটি মেরামতের কাজ করছি। ঝড়ে ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিকল্প পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা করা হলেও সে লাইনটি কাজ করছে না। ফলে রাত থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।

জেপি/নি-৬/এমএইচ